প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিলের অপসারণ করে বিভাগীয় শাস্তির দাবি সাংবাদিকদের মানববন্ধন কর্মসূচি
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
এবি এম জিয়াউল হক টিটু::
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় খেজুরতলায় এলজিইডি প্রকৌশলী আবু নাঈম ( নাবিল) কর্তৃক সাংবাদিকদের লাঞ্চিতের ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে কর্মরত সাংবাদিকরা।
(২৫শে মার্চ সোমবার) সকাল ১১ ঘটিকার সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঘন্টা ব্যাপী এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন জেলার প্রিন্ট,অনলাইন ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা। মানববন্ধনে অংশ নেয় শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম শরীয়তপুর জেলা শাখা, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব শরীয়তপুর জেলা শাখা, শরীয়তপুর প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া জানালিস্ট এসোসিয়েশন, শরীয়তপুর অনলাইন মিডিয়া জানালিস্ট এসোসিয়েশন। এ সময় সাংবাদিকরা অভিযুক্ত প্রকৌশলীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহার ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সোমবার (২৪ মার্চ) বেলা ১১ টায় শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রেসক্লাবসহ শরীয়তপুরের অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) গণমাধ্যম কর্মীরা জানতে পারে ডামুড্যা উপজেলার খেজুরতলা নামক স্থানে রাস্তার কার্পেটিং কাজ চলমান রয়েছে। নতুন এই রাস্তাটির কার্পেটিংয়ের বিটুমিনের সঙ্গে পুরোনো রাস্তা ও পুরোনো সেতু থেকে তুলে আনা পুরোনো পাথর মেশানো হচ্ছে। এমন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে ঘটনাস্থলে যায় দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন, দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি জাহিদ হাসান রনি, বাংলা টিভির প্রতিনিধি নয়ন দাসসহ কয়েকজন সাংবাদিক।
এসময় তারা দেখতে পায়, নতুন রাস্তার কার্পেটিংয়ের বিটুমিনে মেশানোর জন্য ঘটনাস্থলে রাস্তা থেকে তুলে আনা পুরানো কার্পেটিংয়ের পাথর ও পুরোনো সেতু ভাঙ্গার পুরানো পাথর রাখা আছে। বিষয়টি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ডামুড্যা উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিলের কাছে জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে যান তিনি। এসময় তিনি বলেন, কাজের কি বোঝোস? তোরা কারা? তোদের পরাশোনার যোগ্যতা কি? গেট লস্ট। এখান থেকে বের হয়ে যা, এখনই বের হ। এরপর তিনি সোহাগ খান সুজন, জাহিদ হাসান রনিকে ধাক্কা মেরে লাঞ্চিত করেন। এসময় তিনি আরও বলেন, আমার মন্ত্রী সচিব আছেন, জেলা এক্সেন ( প্রোকৌশলী) আমি গুনি না। তোদের পরিচয় বল, আমার শশুর বাড়ির আত্মীয় টিভি চ্যানেলের চিফ রিপোর্টার। এভাবেই তিনি সাংবাদিকদের শায়েস্তা করার হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপরেও আবু নাইম নাবিল ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে জীবন নাশের হুমকি প্রদান প্রদান করেছেন। এটা কোনো পেশাদার কর্মকর্তার আচরণ হতে পারে না। অবিলম্বে প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিলকে অপসারণ করে বিভাগীয় শাস্তি নিশ্চি করতে হবে।
মানববন্ধনে সময় টিভির প্রতিনিধি বি এম ইস্রাফিল বলেন,ডামুড্যাতে চানচঞ্চলতার এই ঘটনায় বিভিন্ন গণ মাধ্যমে খবর প্রকাশ ও থানায় জিডি হওয়ার পর ও উপজেলা প্রকৌশলী নাবিলকে জেলা এলজিইডি অফিস ও তার উর্ধতন কর্মকর্তারা সামন্যতম শোকজ ও করা হয়নি। তাকে যদি শোকজ করা না হয়,তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া না হয় এমন কর্মকান্ড সে কিন্তু করেই যাবে।যার আচরণ সাধারণ মানুষের মত নয়,একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হয়েও যার আচরণ অফিসারের মতন নয়,যার আচরণ মাস্তানীর মতন সেই ধরনের মানুষ কি ভাবে চাকরি করতে আসে।তার বিরুদ্ধে যে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হোক। দ্রুত তাকে এই জেলা থেকে অনত্র সরিয়ে নেওয়া হোক বা তাকে চাকরিচুত্য করা হোক।
মানববন্ধনে প্রথম আলোর শরীয়তপুর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, গণমাধ্যম কর্মীরা জনগণ, পাঠক, দর্শকের কাছে সত্য প্রচারে দায়বদ্ধ। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রকৌশলী আবু নাইম নাবিল গণমাধ্যম কর্মীদের হেনস্থা করেছেন। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই, এলজিইডির জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে যারা আছেন, তারা যেন দ্রুত আবু নাইম নাবিলকে অপসারণ করে বিভাগীয় শাস্তি নিশ্চিত করেন।
মানববন্ধন শেষে গণমাধ্যম কর্মীরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
মানববন্ধনে শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, প্রিন্ট ও অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, শরীয়তপুর অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) নেতৃবৃন্দসহ আরও উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি রায়হান কবীর সোহেল,বিটিভির প্রতিনিধি মফিজুর রহমান রিপন,সময় টিভির জেলা প্রতিনিধি বি এম ইাস্রাফিল,মোহনা টিভির প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান, এখন টেলিভিশনের প্রতিনিধি কাজীমনিরুজ্জামান, মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রতিনিধি কবির উজ্জামান, বৈশাখী টিভির প্রতিনিধি খালেক পেদা ইমন,মাই টিভির প্রতিনিধি সজিব সিকদার,ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি সগির হোসন, ডিবিসি নিউজের রাজিব হোসেন রাজন,যমুনা টিভির এস এম সাকিল,সময়ের আলোর প্রতিনিধি এস এম শফিকুল ইত্যাদি স্বপন সরকার, ভোরের পাতার জামাল মল্লিক,চ্যানেল এস টিভির খোরশেদ আলম বাবুল, এশিয়ান টেলিভিশনের ফারুক আহমেদ মোল্লা, আজকের প্রত্রিকার বেলাল হোসাইন,কালবেলার মিরাজ শিকদার,কালের কন্ঠের প্রতিনিধি শরিফুল আলম ইমন, মাহবুবুর রহমান,গন কন্ঠের রেদোয়ান বিন কবির,নাগরিক টিবির শাহাদাত হোসেন হিরু,দৈনিক আমার সময়ের প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ, যুগান্তরের ভেদরগঞ্জ প্রতিনিধি শাকিল আহমেদ,ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি সাইফ রুদাদ,ইত্তেফাকের জাজিরা প্রতিনিধি শাহিন আলম,যায়যায়দিনের জাজিরা প্রতিনিধি ইমরান হোসাইন ,রাব্বি,দৈনিক সমাচারের সাইফুল ইসলাম,জাগো নিউজের বিধান মজুমদার, গ্লোবাল টিবির সাইফুল ইসলাম আকাশ,সংবাদ প্রকাশের নয়ন দাসসহ অন্যন্যরা।