
শরীয়তপুরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ধ-র্ষ-ণে-র অভিযোগ
শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পালাক্রমে গ’ণ’ধ’র্ষ’ণে’র অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত পরিচালনা কমিটির ঐ সদস্য লিটন লষ্কর(৫০) একই সাথে কেদারপুর ইউনিয়নের একজন সদস্য। অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- শারীরিক শিক্ষক কামাল হোসেন(৩৫), রসায়ন শিক্ষক জিলান(৩৪), খণ্ডকালীন ইংরেজি শিক্ষক সঞ্জয় মজুমদার(৪২) এবং সহকারী শিক্ষক সুজন কুমার(৩৬)।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (২৪-মার্চ) বিদ্যালয় ছুটির পরে কেদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থীকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধ-র্ষ-ণ করে অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য লিটন লষ্কর এবং বিদ্যালয়ের উল্লেখিত শিক্ষকরা।
ঘটনার পরে ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী বিষয়টি নিয়ে কাউকে কিছু না বললেও গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮-মার্চ) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ: গনি বিষয়টি কাউকে জানানোর জন্য ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থীর গলায় ছুড়ি ধরে তাকে হত্যার হুমকি দিলে সে ভয় পেয়ে গিয়ে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। তবে অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে থানায় না গিয়ে আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
এই ঘটনায় মেয়েটি মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। যার ফলে কারও সাথে কোন কথা বলতে পারছেনা মেয়েটি। তবে তার হাতে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গিয়েছে, যেটিতে মেয়েটি লিখেছে- “সব মিললা যিল্লা অনেক দিন হইছে অনেক দিন হতেছিল এইকারনে ডর হয় তাই আমি এরকম করি”।
ভুক্তভোগীর মা জানান, আমার মেয়েটি গত কিছুদিন যাবত কারও সাথেই ঠিকমতো কথা বলছিলোনা বা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াও করছিলোনা। সবশেষে গতকাল আমার মেয়েকে বেশি হতবিহ্বল দেখে তাকে জিজ্ঞেস করলে এক পর্যায়ে আমাকে জরিয়ে ধরে কেদেঁ ফেলে এবং সম্পূর্ণ বিষয়টি আমাকে খুলে বলে। তার সাথে দীর্ঘদিন যাবত এই ধরনের কাজ হচ্ছিলো বলে আমাকে জানায়।
বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ: গনির কাছে ফোনকলের মাধ্যমে জানতে চাইলে তিনি গলায় ছুড়ি ধরার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম, এই বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে কোন শিক্ষক এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কেদারপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কেদারপুর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাশার দেওয়ান এই অন্যায়ের প্রতিবাদ চেয়ে বলেন, সত্যিকারার্থে এই ধরনের অন্যায়ের সাথে কেউ জড়িত থাকলে তার কঠিন বিচার করা হোক এবং অন্যায়ের প্রতিবাদে তীব্র আন্দোলন হোক এটাই আমি চাই।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মিতু জানান, আমরা জানি গতকাল একজন ভুক্তভোগী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছি, এগুলোর রিপোর্ট হাতে পেয়ে মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফিজুর রহমান জানান, শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে আমরা জরুরি মেসেজ পেয়েছি যে ওই মেয়েটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ ব্যাপারে নড়িয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং একজনকে জিজ্ঞাসাবের জন্য আটক করা হয়েছে।