সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ এর সহযোগী আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর অবাধ দুর্নীতি, একাধিক প্রতিষ্ঠান ও ভবন অবৈধ দখল আর্থিক লুটপাট।
একেএম মহিউদ্দিন – সংবাদের পাতা:
বিগত স্বৈরাচার খুনি হাসিনা এক প্রভাবশালী উপদেষ্টা দুর্নীতিবাজ মশিউর রহমানের ছেলেকে সাথে নিয়ে দুর্নীতিবাজ বেনজির আহমেদ এর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় বেপরোয়া হয়ে উঠা জালিয়াতি, ফৌজদারি মামলার আসামি, ভূমিদস্যু আওয়ামী সরকারের বিশ্বস্থজন এবং আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ অবাধ দুর্নীতি, একাধিক প্রতিষ্ঠান ও ভবন অবৈধ দখল এবং আর্থিক লুটপাট এর মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। একাধিক মামলার চার্জশীট ভুক্ত আসামী এবং ইতঃপূর্বে আশিয়ান গ্রুপের দায়ের করা জমি জালিয়াতি ও প্রতারণা অভিযোগে ঢাকার খিলখেত থানায় মামলায় দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ড. কাজী এরতেজা হাসানের সাথে গ্রেফতার হন।
ক্ষমতার দাপটে আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ, সাবেক পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদ এর ছত্রছায়ায় শেখ হেলালের (শেখ পরিবারের) প্রভাব খাঁটিয়ে সাতক্ষীরার দেবহাটায় বিপুল পরিমাণ খাস জমির দখলবাজি নিয়ে তিনি ভূমিহীনদের সঙ্গেও সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সে বিরোধী দুই জনের হত্যাকাণ্ডসহ ব্যাপক রক্তপাত ও জ্বালাও পোড়াওয়ের ঘটনাও ঘটে।
ভূমি ব্যবসায়ী হিসেবে আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ প্রাসাদ নির্মাণ লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। ভবন নির্মাণে ডেভেলপার হিসেবে চুক্তি করে ঢাকার বনানীর ৬ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ এর প্রাসাদ ট্রেড সেন্টার দখল করে আছেন যে জমির মালিক বিএনপির প্রভাবশালী শিক্ষামন্ত্রী জনাব ওসমান ফারুকের বোন জামাই মরহুম ফয়েজ আহমেদ এর। এছাড়াও বনানী ১১ ও ১৭ নম্বর রোডে আরো ২ টি বহুতল ভবন, পুরানা পল্টন এলাকায় ১ টি, মিরপুর ১০ নম্বর রে নির্মাণাধীন শপিং সেন্টার এবং খুলনা শহরের প্রান কেন্দ্রে ২ টি বহুতল ভবন অবৈধভাবে দখল করে আছেন। গুলশান বনানীতে জায়গা জমির ব্যবসার মধ্য দিয়েই মূলত উত্থান ঘটে আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর।
এ ছাড়াও কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিনে বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্ট নির্মাণ এবং সমুদ্র ভবনের জন্য বিলাস বহুল জাহাজ ও ইয়ট এর মাধ্যমে ট্যুরিজম ব্যবসার মাধ্যমেও অবৈধভাবে বহু টাকার মালিক সে হয়েছেন। উল্লেখ্য বিএনপির তৎকালীন মন্ত্রী জনাব সালাহ উদ্দিন এমপির সাথে প্রতারনা করে আওয়ামী ছত্রছায়ায় সে সকল বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্ট এর একক ছত্র মালিক বনে যান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল নিয়মনীতি অগ্রাহ্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর শিক্ষক আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ একাধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর পরিচালক, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি খুলনার ভিসি এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে বিগত সরকারের ছত্র ছায়ায় অবাধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং অর্থ আত্মসাৎ করে বিশাল বৈভব এবং অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে। তার ছেলে সাদ আল জাবির আব্দুল্লাহ এবং মেয়ে লাবিবা আব্দুল্লাহ, মা- বাবা, বোনকে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য করে নিয়ে রীতিমত বিশ্ববিদ্যালয়টিকে পারিবারিক ও স্বজনদের সম্পত্তিতে পরিণত করেছেন তিনি।
২০১১ সালে নর্দান ইউনিভার্সিটি এবং নর্দান মেডিকেল কলেজ দখল এর মধ্য দিয়ে বেপরোয়া শিক্ষা বাণিজ্যে নেমে পড়েন তিনি। ব্যাংক এশিয়া থেকে ৪০ কোটি টাকা এবং বেসিক ব্যাংক থেকে ৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা অপরিশোধিত রেখেছেন। বিগত বিতর্কিত দু’টি সংসদ নির্বাচনে তিনি সাতক্ষীরা ৩ থেকে আওয়ামীলীগ এর টিকেট এ এমপি নির্বাচন করার খায়েস নিয়ে দৌড়ঝাপ করেছেন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে এবং নানারকম ভয়-ভীতি ও মামলার ভয় দেখিয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএটি ট্রাষ্ট এর ট্রাষ্টিদের স্বাক্ষর জাল করে প্রকৃত মালিকদের প্রতিষ্ঠান সমূহ থেকে দূরে রাখেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি ড; শামসুল হক ও আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ তাঁর মা, বাবা, স্ত্রী (হালিমা সুলতানা জিনিয়া), ছেলে (সাদ আল জাবির আব্দুল্লাহ), মেয়ে (লাবিবা আব্দুল্লাহ), বোন (হাবিবুন্নাহার) মিলে আলাদা নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এনইউবি) ট্রাস্ট গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় টি দখল করে রেখেছেন।
বর্তমানে আইবিএটি ট্রাষ্টের অধীনে প্রতিষ্ঠান সমূহে প্রায় দুহাজার কোটি টাকার উপরে স্থায়ী সম্পদ আছে যা ইউসুফ আব্দুল্লাহ তার ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মধ্যে ধানমন্ডিতে বিশ কাঠার উপর দুটি বেজমেন্ড সহ আটতলা ভবন, মিরপুর দশ নম্বরে চার বিঘা জমির উপর পনর তলা মার্কেট নির্মানাধীন, ৯৩, কারওয়ান বাজার আটটি ফ্লোর, নিউ মার্কেট গ্লোব সপিং এ চারটি ফ্লোর, আসকোনায় পাচ বিঘার উপর দশতলা ভবন, রাজশাহী, বোয়ালীয়া উপজেলা, কাজলা মৌজায় ৯৫৬ ও ৯৫৭ দাগে ১৮ কাঠা জমি। বছরে পঞ্চাশ থেকে ষাট কোটি টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। ২০১১ সাল হতে আজ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছে বলে বিভিন্ন সুত্রে কথিত আছে এবং তার স্ত্রী (হালিমা সুলতানা জিনিয়া), ছেলে (সাদ আল জাবির আব্দুল্লাহ), মেয়ে (লাবিবা আব্দুল্লাহ) নামে দেশে বিদেশে অবৈধ সম্পদ এর পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
এ দেশের ছাত্র জনতার রক্তস্নাত পথবেয়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পরে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারে গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ বাংলাদেশের আপাময় জনসাধারণকে দারুনভাবে আশাবাদী করে তুলেছে। ইতোমধ্যে খুনী, লুটেরা ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যে ব্যবস্থা গ্রহন করেছে তাতে সাধারন মানুষ ন্যায্যতা ফিরে পেতে শুরু করেছে। বিগত সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তি, জালিয়াতি, ফৌজদারি মামলার আসামি, ভূমিদস্যু আওয়ামী সরকারের বিশ্বস্থজন আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর অবাধ দুর্নীতি এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান ও ভবন অবৈধ দখল মুক্ত হবে সেটাই সবাই আশা করে।
আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ সকল প্রকার দুর্নীতির এবং সংঘঠিত সকল জালজালিয়াতি ও বিশ্ববিদ্যলয়ের দশ হাজার শিক্ষার্থির আয় ও ব্যায়ের হিসাব অনুসন্ধান পূর্বক, হাজার হাজার কোমল মতি শিক্ষার্থী, শিক্ষক মন্ডলী ও কর্মকর্তাদের সার্থে এবং বিশ্ববিদ্যলয়ের বভিষ্যৎ কল্যানে, দ্রুত তাকে বিচাররের আওতায় নিয়ে আসতে সকল মহল এর পক্ষ থেকে জোড়াল দাবী জানানো হয়।