
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের শৃঙ্খলা যেন ফিরে আসছে নতুন জিএম এর কর্মদক্ষতায়!
একেএম মহিউদ্দিন – বিশেষ প্রতিনিধি
সংবাদের পাতা:
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার(জিএম) সুবক্তগীন এর কর্মদক্ষতায় শৃঙ্খলা ফিরেছে সব জায়গায়।
জনবল ও লোকোমোটিভ সংকটে বাংলাদেশ রেলওয়ে যখন একটি ক্রান্তিকাল সময় পার করছে, ঠিক এর বিপরীত অবস্থা বিরাজ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে। আর এ সফলতার অন্যতম দাবীদার সদ্য যোগদানকারী জিএম সুবক্তগিন।
সদ্য যোগদানকারী জিএম সুবক্তগীন এর দক্ষ নেতৃত্বের ফলে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ রেলওয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, পূর্বাঞ্চলে ট্রেন পরিচালনা সহ সামগ্রিক ক্ষেত্রে একটি সুশৃংখল পরিবেশ প্রতিফলিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়েতে দুই ধরনের ট্রেন চলাচল করে। মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ। পূর্বাঞ্চলে প্রায় অধিকাংশ ট্রেন মিটারগেজ প্রকৃতির। বর্তমান বাংলাদেশ রেলওয়েতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে তা হচ্ছে এই মিটার গেজ লোকোমোটিভ এর সংকট। এই অঞ্চলেই রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের অন্যতম আয়ের উৎস মালামাল পরিবহনকারী কন্টেইনার ও তেলবাহী ট্যাঙ্কার এর ব্যবস্থাপনা এবং পরিত্যক্ত জমিকে দরপত্রের মাধ্যমে টেন্ডার করে আয় বৃদ্ধি করা।
লোকোমোটিভ সংকটের কারণে কিছুদিন আগেও চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় দুই হাজার এর অধিক কন্টেইনার রেলের মাধ্যমে পরিবহনের জন্য অপেক্ষমান ছিল, জিএম এবং তার পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তাদের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে সাতশত তে নেমে এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারী যে সকল ব্যবসায়ী তাদের পন্যবাহী কন্টেইনার বাংলাদেশ রেলওয়ের মাধ্যমে পরিবহন করেন, তারা আমাদের প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে ঈদের আগে এই কন্টেইনার দ্রুত পরিবহনে বর্তমান রেলওয়ে ব্যবস্থাপনার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বর্তমান জিএম এর নেতৃত্বের প্রভাব পড়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলেও। ইতোমধ্যেই পূর্বাঞ্চলের প্রধান রেল রুট ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম কক্সবাজার, চট্টগ্রাম সিলেট, ঢাকা সিলেট, ঢাকা জামালপুর ময়মনসিংহ রুটগুলোতে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর পানচুয়ালিটির হার গড়ে প্রায় ৯০ শতাংশ, এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম এ হার প্রায় ১০০ শতাংশ।
তার যোগদানের পরে লোকোমোটিভ এর সংকট থাকার পরেও চট্টগ্রাম কক্সবাজার রুটে একজোড়া নতুন ট্রেন পরিচালনা শুরু হয়েছে। এবং এ মাসেই ঢাকা – ভৈরব বাজার রুটে আরো এক জোড়া নতুন ট্রেন চালু হচ্ছে। এর মাধ্যমে তিনি জনগণকে বিরাজমান সম্পদের সর্বোচ্চ আউটপুট দেয়ার চেষ্টা করছেন।
এছাড়াও সিলেট, নোয়াখালী সহ নতুন যে ট্রেন দেয়ার কথা সেগুলোকে দ্রুত চালু করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নবাগত পূর্বাঞ্চলের জিএম দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের অবৈধভাবে বিভিন্ন দখলকৃত জায়গা উদ্ধারকৃত মনোনিবেশ করে উদ্ধারকৃত জায়গা সমূহ লাভজনক উপায়ে ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি জিএম হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পূর্বে বাংলাদেশ রেলওয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সেখানে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। এরমধ্যে গত বছরে শেষ হওয়া আখাউড়া লাকসাম ডাবল লাইন প্রকল্পটি ডিপিপিতে নির্ধারিত অর্থ থেকেও প্রায় এক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করে প্রকল্পটি সম্পাদন করেছেন।
এবং সম্প্রতি শেষ হওয়া কক্সবাজার দোহাজারী রেললাইন প্রকল্পটিতে শেষ সময় যোগদান করে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন। তিনি শুধু তার এই কর্মদক্ষতার কারণেই পরিচিত নন, সর্বদা সাদালাপি এবং নম্র ও মিষ্টি ব্যবহারের জন্য তিনি তার সকল সহকর্মী ও অধীনস্ত সকল স্টাফের নিকট খুবই জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব।
তার অধীনে কর্মরত যে কোন রেল সদস্য যে কোন সময় তার কাছে সরাসরি যে কোন বিষয় নিয়ে খুব সহজেই দেখা করতে পারেন এবং তাদের সমস্যা তুলে ধরতে পারেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রায় সকল রেল সদস্যের সাথে কথা বলে জিএম সুবক্তগীন এর বিষয়ে একটি অভূতপূর্ব প্রশংসা সূচক মতামত লক্ষ্য করেছেন প্রত্যক্ষদর্শিরা।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা সৎ দক্ষ হলে দ্রুত এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।