
পথ আটকে ছাত্রদল নেতাকে যুবলীগ নেতার মারধরের অভিযোগ।
নিজস্ব প্রতিবেদক – সংবাদের পাতা:
ভাইয়ের শশুড় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ফেরার পথে শাওন মাদবর নামে এক ছাত্রদল নেতাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শহিদুল সরদার নামে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। আহত ওই ছাত্রদল নেতা বর্তমানে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতার স্বজনরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) শরীয়তপুরের পালং মডেল থানায় অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ও থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভাইয়ের শশুড় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের চররোসুন্দী গ্রামের ছাত্রদল নেতা শাওন মাদবর তার বোন লাকী আক্তারসহ বাড়িতে ফিরছিলেন। তাদের বহনকারী অটোরিকশাটি দক্ষিণ চররোসুন্দী গ্রামের লতিফ মুন্সির বাড়ির কাছে আসলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শহীদুল সরদার, কালাম বেপারী, নাইম সরদারসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন অটোরিকশাটি থামিয়ে ছাত্রদল নেতা শাওন মাদবরকে মারধর শুরু করে। হামলাকারীরা হামলার সময় বারবার বলতেছি, তোরে এখন মেরে ফেলব, তোর বিএনপির কোন বাপ আছে তারে নিয়ে আয়। অটোরিকশায় থাকা শাওনের বোন লাকীসহ অন্যান্যরা তাকে বাঁচাতে গেলে তাদের উপরও হামলা করে তারা। এসময় লাকি আক্তার, শাওন চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসার আগেই যুবলীগ নেতা শহিদুল সরদারসহ অন্যান্যরা লাকী ও শাওনের কাছে থাকা নগদ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে যুবলীগনেতা শাওন মাদবরসহ তার লোকজন পালিয়ে চলে যায়। এঘটনায় পালং মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শাওন মাদবরের বোন লাকী আক্তার।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রদল নেতা শাওন মাদবর বলেন, আমার বাড়ির সামনে একটি ভোট কেন্দ্র। গত উপজেলা নির্বাচনের দিন আমি বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম বাজার করার উদ্দেশ্যে। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচন নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ ছিল না। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসতেছি, যুবলীগ নেতা শহিদুল সরদারসহ অন্যান্যরা আমাকে মারধর করেছিল। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে আইনের কাছে বিচারও চাইতে পারিনি। এতটা নির্যাতনের শিকার হয়েও গত ৫ আগস্টের পরে আমি সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে কারও কোনো ক্ষতি করার চিন্তাও করিনি। কিন্তু সন্ত্রাসের দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ আমার পরিবারসহ আমার উপর আবার হামলা করেছে। এবার আমি থানায় অভিযোগ করেছি। আমি এলাকায় কোনো মারামারি কাটাকাটি চাই না। আইনের মাধ্যমে বিচার চাই, দেশ বাসীর কাছে বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে জেলা ছাত্রদল নেতা আতিক খান বলেন, শাওন মাদবর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা। তার উপর আওয়ামী যুবলীগের শহিদুল সরদার এর আগেও হামলা করেছিল। এবারও হামলা করেছে। আমরা আইনগতভাবে এর বিচার দাবি করছি।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শহিদুল সরদার বলেন, কিছুদিন আগে আমার ছেলেকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে নিয়ে মারধর করেছে শাওন মাদবরসহ ১০-১৫ জন লোক। ওই সময় আমার ছেলের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল রেখে দিয়েছিল শাওন মাদবর। আমি স্থানীয় মুরব্বিদের কাছে বিচার দেওয়ার পর শাওন মাদবর মোবাইল ফেরত দিয়েছে কিন্তু টাকা ফেরত দেয়নি। শাওনের আত্মীয় বাড়ি আমার বাড়ির কাছে, এখানে একটি দোকানের সামনে শাওনকে পেয়ে আমি একটি থাপ্পড় দিয়েছি। মিথ্যা কথা বলতে চাই না। আমার ছেলেকে মারধর করার কারণে রাগ-ক্ষোভ থেকে আমি একটি থাপ্পড় দিয়েছি। আমার ছেলেকে মারধরের ঘটনায় আমি থানায় জানাইনি। আমি গৃহস্থ মানুষ, যুবলীগ করি না।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।