সবার কথা বলে

নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে (মুলফৎগঞ্জ হাসপাতাল) স্থায়ী ভাবে রাখার দাবিতে মানববন্ধন

0 6

নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে (মুলফৎগঞ্জ হাসপাতাল) স্থায়ী ভাবে রাখার দাবিতে মানববন্ধন।

এস এম জীবন রায়হান – সংবাদের পাতা:

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের মুলফৎগঞ্জে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনে চিকিৎসা সেবা চালু রাখার ও হাসপাতাল টি স্থায়ীভাবে রাখার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মুলফৎগঞ্জ বাজারের প্রধান সড়কে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনের আয়োজন করে মুলফৎগঞ্জ বাজার বণিক সমিতি। কর্মসূচিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নড়িয়া উপজেলা শহরে নতুন ভবনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালু হলেও, পদ্মা নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলসহ আশেপাশের ইউনিয়নের মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য মুলফৎগঞ্জ হাসপাতাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নদীপারের এসব মানুষের জন্য মুলফৎগঞ্জ হাসপাতাল ছাড়া কোনো কার্যকর বিকল্প নেই।

তারা আরও বলেন, সরকার যদি এই হাসপাতাল ভবনে ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসাসেবা সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করে চালু না রাখে, তবে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন তারা।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিহির চক্রবর্তী, বণিক সমিতির সভাপতি এলাম বক্স লসকর, সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন বেপারী, মো. ইয়ারবক্স লসকর, সোহেল দেওয়ান, রাজ্জাক ছৈয়াল, মাওলানা লুৎফুল্লাহ রহিত, আব্দুল মান্নান খান, মুন্নী খানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এছাড়াও মুলফৎগঞ্জ মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ৫০ শয্যার নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর অবশিষ্ট পুরাতন ভবন ও ডাক্তার কোয়ার্টারে ২০ শয্যার ইনডোর ও আউটডোর চিকিৎসাসেবা চালু রাখা হয়।
পরবর্তীতে নড়িয়া উপজেলা শহরে ৬ একর জমি অধিগ্রহণ করে নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাসেবা চালু করার পরিকল্পনা নেয় স্বাস্থ্য বিভাগ। একইসঙ্গে মুলফৎগঞ্জের পুরাতন হাসপাতালে সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান হাইকোর্টে রিট দায়ের করলে আদালত তা আমলে নিয়ে দুই দফায় ছয় মাস করে মোট এক বছরের স্থগিতাদেশ দেন। এর ফলে বর্তমানে নতুন হাসপাতালের পাশাপাশি মুলফৎগঞ্জ হাসপাতালেও সেবা অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যে, স্বাধীনতার পরপর তৎকালীন স্থানীয় নেতা মনাই দেওয়ান তার নিজস্ব জমিতে এই হাসপাতাল গড়ে তোলেন এবং পরে তা সরকারের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রাথমিকভাবে ৩০ শয্যার এ হাসপাতালটি পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়।

স্থানীয়রা বলছেন, এই ঐতিহ্যবাহী হাসপাতালটি পদ্মার তীরবর্তী অঞ্চলবাসীর জন্য একমাত্র ভরসা। তাই সরকারি সিদ্ধান্তে এর কার্যক্রম বন্ধ করা হলে, তা নদীপারের মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগ ডেকে আনবে।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.