সবার কথা বলে

শুহাদায়ে কারবালা: সত্য ও ন্যায়ের চিরকালীন প্রতীক

0 22

শুহাদায়ে কারবালা: সত্য ও ন্যায়ের চিরকালীন প্রতীক।

কলমে : আজগর হোসাইন আতিক

ইসলামের ইতিহাসে কারবালার ঘটনা এমন এক অধ্যায়, যা কেবল একটি যুদ্ধ বা সংগ্রাম নয়, বরং সত্য, ন্যায়, আত্মত্যাগ ও ঈমানের এক উজ্জ্বল নিদর্শন। ৬১ হিজরির ১০ই মহররম ইরাকের কারবালা প্রান্তরে হজরত হুসাইন (রাঃ) এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবীদের উপর সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড কেবল ইতিহাস নয়, এটি মুসলিম উম্মাহর চেতনার বাতিঘর।

কারবালার প্রেক্ষাপট

নবী মুহাম্মদ (সা.) এর ওফাতের পরে খিলাফতের ধারাবাহিকতা নানাভাবে ব্যাহত হয়। হজরত আলী (রাঃ) এর শাহাদাতের পর ইয়াজিদ খিলাফতের নামে রাজতন্ত্র কায়েম করে। ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড, অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো হুসাইন (রাঃ)-এর নৈতিক দায়িত্বে পরিণত হয়। তিনি ইয়াজিদের বায়আত (আনুগত্য স্বীকার) প্রত্যাখ্যান করেন।

কারবালার যাত্রা ও অবরোধ

হজরত হুসাইন (রাঃ) পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা হন। কুফার জনগণ তাঁকে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু ইয়াজিদের বাহিনী পূর্বেই ব্যবস্থা নিয়ে রাখে। পথিমধ্যেই তাঁকে কারবালায় থামিয়ে দেওয়া হয়। পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবাই তৃষ্ণায় কাতর হতে থাকে।

আশুরার দিন ও শাহাদত
১০ই মহররম, আশুরার দিনে শুরু হয় সেই হৃদয়বিদারক হত্যাযজ্ঞ। একে একে হজরত হুসাইন (রাঃ)-এর ভাই, সন্তান, ভাগ্নে, ভ্রাতুষ্পুত্র ও সহচররা শহীদ হন। অবশেষে তিনি নিজেও শাহাদত বরণ করেন। তাঁর কাটা মাথা দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে পাঠানো হয়।

কারবালার শিক্ষা
কারবালা আমাদের শিক্ষা দেয়—
সত্যের জন্য জীবন দেওয়া যায়, কিন্তু অন্যায়ের সাথে আপস করা যায় না।
তাকওয়া, আত্মত্যাগ ও আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ ভরসাই প্রকৃত মুসলিমের পরিচয়।
সংখ্যায় কম হলেও যদি ঈমান মজবুত হয়, তবে তা ইতিহাস পাল্টে দিতে পারে।

শুহাদায়ে কারবালার প্রতি শ্রদ্ধা
শুহাদায়ে কারবালার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো মানে শুধু তাঁদের স্মরণ নয়, বরং তাঁদের আদর্শে জীবন গঠন করার শপথ নেওয়া। তাঁদের আত্মত্যাগ কেবল শোক নয়, বরং আমাদের চেতনার আগুন—যা আমাদের আলোকিত করে চলার পথ দেখায়।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.