হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী সোমবার বিকাল ৩টায় দুধকুমার নদীর পানি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাটেশ্বরী পয়েন্ট বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি বাড়ায় তলিয়ে গেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসল। এদিকে উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোতের সাথে ভেসে এসেছে হাজার হাজার গাছের গুড়ি। এসব গুড়ি রবিবার শেষ বিকাল থেকে স্থানীয় জনগণ সাতরীয়ে সংগ্রহ করেন। শুধু কাঠ নয় তীর থেকেই অনেকে ধরেছেন বড় বড় মাছ। এসব কাঠের গুড়ির সাথে ভেসে এসেছে বিসাক্ত সাপও। নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের খেলারভিটা এলাকায় দুধকুমার নদীকে ভেসে আসা কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে নদীর তীব্র স্রোতে নিখোঁজ হন মনছুর আলী (৩৮) নামের এক ধান ব্যবসায়ী। তিনি ওই ইউনিয়নের খামার নকুলা গ্রামের বাসীন্দা বলে জানা গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিখোঁজ মনছুর আলীকে খুঁজতে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল কাজ করলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান সোমবার সকালে ভারত থেকে নেমে আসা কাঠ ও গাছের গুঁড়ি সংগ্রহ করতে নদীতে নামের মনছুর আলী। এ কপর্যায়ে নদীর প্রবল স্রোতে ভারসাম্য হারিয়ে পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ডুবুরি দল এসে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের এক যুবক সাপের কামড়ে আহত হলে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠে। অপরিদিকে ওই ইউনিয়নের ছিট মালিয়ানি এলাকায় বিশাল আকৃতির একটি অজগর সাপ ধরে সাপটিকে আহত করে ছেড়ে দিয়েছে স্থানীয়রা। এ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে ওই এলাকায়।
স্থানীয়দের ধারণা, ভারী বৃষ্টিপাত ও তীব্র স্রোতে ভেসে আসা কাঠ ও গাছের গুঁড়ি ভারতের বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে ভ‚রুঙ্গামারীর কালজানী নদী হয়ে দুধকুমার নদে ভেসে আসতে পারে। ফলে এসব কাঠ ও গাছের গুুঁড়ি রায়গঞ্জ, চর দামালগ্রাম, বেরুবাড়ী, নুনখাওয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নদীর ধারের লোকজন সংগ্রহ করেন। এসব গাছের গুঁড়ির সাথে সাপ, মাছ ও মরা গরুসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি ভেসে আসতে দেখা গেছে বলে জানান তারা। স্থানীয় প্রশাসন জানান, এসব গাছ ভুটান থেকে ভারতের হাসিমারা বনাঞ্চল (হাসিমারা ফরেস্ট) হয়ে ভেসে আসতে পারে।
উপজেরা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে দুধকুমারসহ বিভিন্ন নদ-সদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও এই পানিতে কাঠ ও গাছের গুুঁড়ি এবং বিষাক্ত সাপ ভেসে আসছে। ইতোমধ্যে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে একজন নিখোঁজ হয়েছেন। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকা জরুরি।