বালিয়াডাঙ্গীতে ভেকু দিয়ে চলছে মাটি কাটার মহাউৎসব।
মোঃ সাইফুল ইসলাম
বালিয়াডাঙ্গী ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
দীর্ঘদিন ধরে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অনুমোদন ছাড়াই প্রায় প্রতি দিন-রাত চলছে বাণিজ্যিক ভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার মহাউৎসব।
সম্প্রতি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, জাওনিয়া তিরন্নই নদি সংলগ্ন উপরের ফসলী জমির ৫/৬ ফুট (টপ সয়েল) মাটি তুলে নিয়ে বিক্রি করছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ও ইটভাটায়। মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে সড়কগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শত শত অনুমোদন বিহীন ট্রলি ও ড্রাম ট্রাক। এসব গাড়ির অবাধ চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। ট্রলি ও ট্রাকে বহন করা মাটি সড়কের ওপরে পড়ে থাকছে। অতিরিক্ত গাড়ি চলাচলের কারনে সারাদিন ধুলোর কোয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে রাস্তাঘাট। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বৃষ্টি হলেই সড়ক ভিজে মাটি পিচ্ছিল হয়ে প্রতিনিয়ত ঘটে দূর্ঘটনা।
উপজেলার ২ নং চাড়োল ইউনিয়নের নাম বলতে অনিচ্ছুক একাধিক আলু চাষী কৃষক বলেন, মাটি ব্যবসায়ীরা নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে, অল্প টাকায় জমির মালিকদের নিকট থেকে ফসলি জমির মাটি কিনে নেয়। আর এ মাটি বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রি করছেন বিভিন্ন স্থানে ও ইটভাটায়। উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে দু-একটি অভিযান পরিচালনা করলেও কোনো ভাবেই থামছে না অপরিকল্পিত মাটি কাটা। এতে করে জমির উর্বরতা হারিয়ে ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মানচিত্র। মাটি কাটা বন্ধ করতে চাইলে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় অভিযান পরিচালনা করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
উপজেলার ২ নং চাড়োল ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ীদের একজন আমিরুল জানান, মানুষের প্রয়োজনে আমরা মাটি কাটি। এবিষয়ে মাটি ব্যাবসায়ী আমিরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের দিয়ে ফোন দেওয়ায় এবং গণমাধ্যম কর্মীরাদের টাকা দিয়ে মেনেজ করার চেষ্টা করে। পাশের জমির কৃষকরা জানান এই মাটি ব্যাবসায়ী আমিরুল ইসলাম এর একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি চাচ্ছি আমরা ।
জমির মালিকদের একজন নাম বলতে অনিচ্ছুক তিনি জানান, আমরা আমাদের প্রয়োজনেই নিজের জমি থেকে মাটি কাটি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌস জানান, ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে ফেললে জমির অনেক ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি পূরণ করতে প্রায় ৩ বছর সময় লাগে। ভেকু দিয়ে মাটি কাটতে আমি দু’এক জায়গায় দেখেছি। জমির টপ সয়েল কাটতে আমরা কৃষকদের নিরুৎসাহি করছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসানুল হক জানান, আমরা ভেকু দিয়ে মাটি কাটছে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনা স্থলে ফোঁস নিয়ে আসতে দেখে সেখান থেকে ভেকু নিয়ে পালিয়ে যায় মাটি ব্যাবসায়ী আমিরুল ইসলাম। ভেকু দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধে, অভিযান চলমান আছে, চলমান থাকবে।