
অবৈধভাবে বিদ্যুৎ চুরি করে ব্যবহারের দায়ে অর্থদণ্ড দিলো ঝাঁওগড়ার রিপন মিয়া।
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম – সংবাদের পাতা:
জামালপুর জেলা বিপিডিবি অফিসের সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ, লাইন ম্যান ও মিটার পাঠকদের একটি দল সাথে নিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ উচ্ছেদ করতে জান সরজমিনে, জামালপুর মেলান্দহ উপজেলার অন্তর্গত ১০নং ঝাউগড়া ইউনিয়নের পয়ের বাড়ী মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে রিপন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় বিদ্যুতের খুঁটি হতে আসা মেইন লাইন (সার্ভিস লাইন) রিপনের ঘরে থাকা মিটারে ইনপুট হওয়ার এক দেড় ফুট আগে বাইপাস হয়ে অবৈধ ভাবে তার বসতবাড়ির দুইটি ঘরে থাকা ফ্রিজ, ফ্যান, বাতি ও মটর অবৈধ ভাবে ব্যাবহৃত হয়ে আসছে।
এসব দেখে অভিযান পরিচালনায় অংশগ্রহণকারীরা তাৎক্ষণিক রিপনের বাড়ী থেকে অবৈধভাবে ব্যাবহৃত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে জামালপুর জেলা বিপিডিবি অফিসে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীর একটি অনুসন্ধানী দল রিপনের বাড়ীতে গিয়ে তার কাছে অবৈধভাবে বাইপাস করে বিদ্যুৎ ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানিনা তাঁরা আমার লাইন কেনো বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে গেলো, আমি নাকি বাইপাস করে বিদ্যুৎ চুরি করেছি। আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যাচার করা হচ্ছে, আমি কোনো ধরনের বাইপাস লাইন ব্যবহার বা সরকারি বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করি নাই।
রিপন মিয়া আরও বলেন বিপিডিবির রফিক, মনোহর, মামুন গং এদের হাতে জাদু আছে। তাদের সাথে কোনো বিদ্যুৎ গ্রাহকের মতের অমিল হলে তাঁরা গ্রাহকের বিদ্যুৎ লাইনে হাত দিলেই বৈধ লাইন অবৈধ, আবার কখনো অবৈধ লাইন বৈধ হয়ে যায়।গণমাধ্যম কর্মীরা রফিকের কাছে রিপনের লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে রফিক খুব রুক্ষ ব্যাবহার করে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে।
শিওরী, শিহাটা, ঝাঁওগড়া, পয়েরবাড়ী সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বিদ্যুতের গ্রাহক সহ সাধারণ জনগণের কাছ থেকে জানা গেলো বিপিডিবির কোনো কর্মচারী না হয়েও শুধু রিপনের বোন জামাই হওয়ার সুবাদে মনোহর বিপিডিবির অনেক কাজকর্মই করে আসছে দ্বীর্ঘদিন যাবৎ, মূলত মনোহর একজন বিপিডিবির দালাল।
রফিক বিপিডিবির সাবেক সিবিএ শ্রমিকলীগ নেতা সাবেক সভাপতি মনজুরুল ইসলাম সবুজ এর হাতিয়ার হয়ে করে আসছে অনেক অনিয়ম, তেমনি মামুন জামালপুর সদর আসনের সাংসদ আবুল কালাম আজাদ এর গোষ্ঠীগত ভাতিজা, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় নির্বাচনে ভোটের মাঠে সক্রিয় কর্মী হিসেবে মাঠ কাঁপিয়েছেন। সেসময়ে দলীয় প্রভাব, ক্ষমতার দাপট, দাম্ভিকতায় রফিক, মামুন, মনোহর এরা গড়েছেন নানা অনিয়ম দূর্নীতির ইতিহাস।
জানা যায় রিপন মিয়া ১০নং ঝাঁওগড়া ইউনিয়ন যুবদলের ৩নং ওয়ার্ডের আহ্বায়ক প্রার্থী। ৫আগস্টের পূর্বে রিপন তার চাচাতো ভাই জাকিরুল ইসলাম ১০নং ঝাঁওগড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক এর পাওয়ার শক্তি নিয়ে এবং বর্তমান সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে রিপন বাইপাস লাইন ব্যবহার করে অবৈধ পন্থায় বিদ্যুতের অপব্যবহার করে আসছেন।
জামালপুর জেলা বিপিডিবি অফিসের ৩সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নিয়মাবলির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা, পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা পর্যন্ত ধারণকৃত ভিডিও দেখে তার অপরাধ পর্যালোচনা করে রিপনকে ৩মে/২৫ ইং তারিখে ১৯হাজার ১১৮টাকা জরিমানা ধার্য্য করে এবং নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সেই অর্থ পরিষোধ করতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে সরকারি বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করার দায়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।
অবৈধ পন্থায় বিদ্যুুৎ ব্যবহার করা প্রমাণিত হওয়ায় রিপন অফিসে যোগাযোগ করে এবং আইনি ঝামেলা এড়াতে অফিস কর্তৃক অর্থদণ্ড ১৯১১৮/- (উনিশ হাজার একশত আঠারো টাকা) ৪মে/২৫ ইং তারিখে পূবালী ব্যাংক লিমিটেড জামালপুর শাখায় জরিমানা বিল প্রদান করেন। জরিমানার বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীর একটি দল জামালপুর জেলা বিপিডিবি নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মহিবুল আজাদ রুবেল (বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ, বি.উ.বো জামালপুর) এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন রিপন দ্বীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছে তার সত্যতা প্রমাণ স্বরুপ ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত নীতিমালায় তাকে জরিমানা করা হয়েছে এবং উক্ত জরিমানার অর্থ সে যথা সময়ের মধ্যেই পরিশোধ করেছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মহিবুল আজাদ রুবেল গণমাধ্যম কর্মীদের আরো বলেন আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে মানুষকে জানিয়ে দিন কেউ যেন অবৈধভাবে বাইপাস লাইন ব্যবহার না করে এবং সরকারি বিদ্যুৎ সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ডিজিটাল মিটারের মাধ্যমে সকল গ্রাহক যেনো সরবরাহ করে।