সবার কথা বলে

আন্দোলন নি হ ত ফরহাদের ম র দেহ উত্তোলনে পরিবারের বাধা

0 30

আন্দোলন নিহত ফরহাদের মরদেহ উত্তোলনে পরিবারের বাধা।

মো: মিরাজ শেখ – সংবাদের পাতা:

মাগুরায় ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন (২৫) শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়। পরে এ হত্যার ঘটনায় মাগুরা সদর মামলা করা হলে মরদেহ ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর ) মরদেহ উত্তোলনে গেলে ফরহাদের পরিবার ও এলাকাবাসী আপত্তি জানায়। এতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন না করেই বেশ কয়েক ঘন্টা পর ফিরে যান এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ফরহাদ হোসেনের মরদেহ উত্তোলনের জন্য শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর কবরস্থান যায় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাহিদুল ইসলাম,শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইদ্রিস আলী, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যরা সহ সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু মরদেহ উত্তোলনে নিহত ফরহাদের পরিবারই আপত্তি জানায়। এ অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মরদেহ উত্তোলন না করেই ফিরে যান জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট।

নিহত ফরহাদের মা মোছা.শিরিনা বেগম বলেন,আমার ছেলেকে কবর থেকে যেন আর উঠানো না হয়।আর যদি বিশেষ দরকার হয়েই পরে আমাকে লাশ করে ওই কবরে রেখে উঠিয়ে নিয়ে যান। এছাড়া আমার আর কিছুই বলার নেই।

নিহত ফরহাদের বড় ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী গোলাম কিবরিয়া বলেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমার ভাই শহীদ হয়। আমার ভাইকে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল নেওয়া হয় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকের তাকে ময়নাতদন্ত করতে আস্বীকৃতি জানায়। আমরা এক প্রকার বাধ্য হয়ে তার মরাদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসি এবং রায়নগর পশ্চিম পাড়া কবরস্থানে দাফন করি।এরপরে আমরা পারিবারের সবাই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলাম। আমার আম্মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ রয়েছেন। আমরা পারিবারিক ভাবে কোন মামলা করি নাই। পরে আমরা জানতে পারি প্রায় দেরশো জনকে আসামি করে অন্য একজন ব্যক্তি মামলা করেছেন।রাজনৈতিক বা আর্থিক কি উদ্দেশ্যে তিনি মামলা করছেন জানি না।আমরা জানতে পেরেছি এই মামলা নিয়ে বাণিজ্য চলছে। আমরা এটা কোন ভাবেই সমর্থন করি না।প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি মামলা বাণিজ্য নিয়ে যেন তদন্ত করা হয় দোষীদের যেন আইনের আওতায় আনা হয়।আজ এ মামলার কারণে আদালতের নির্দেশ পুলিশ এসেছেভ কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য। আমরা পরিবার থেকে এবং এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি আমরা ফরহাদের মরদেহ উত্তোলনের পক্ষে নাই। এ ব্যাপারে আমরা সহযোগিতা করতে পারবো না।মরাদেহ উত্তোলন না করার বিষয়ে পরিবারের অবস্থান দৃঢ় থাকার কারণে প্রশাসনের কর্মকর্তারা আমলে নিয়েছেন। মরদেহ উত্তোলন ছাড়াই ফিরে যাবেন।

এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো.মোজাহিদুল ইসলামসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, মাগুরা সদর উপজেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের উত্তর বীরপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন বাদি হয়ে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।

তবে মামলা সম্পর্কে নিহতের পরিবারের কারও সঙ্গে বাদির কোনো কথা হয়নি বলেও ফরহাদের পরিবার নিশ্চিত করেছে।

মাগুরা সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২১ আগস্ট) রাতে রেকর্ডভুক্ত মামলাটিতে মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর এবং মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার ছাড়াও সুনির্দিষ্ট ৬৭ জন এবং অজ্ঞাত ১০০/১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে সোমবার ফরহাদের মরদের ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করতে রায়নগরে গিয়েছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।পরে ফরহাদের পরিবার ও এলাকাবাসী অস্বীকৃতি জানালে বেশ কয়েক ঘন্টা পর মরদেহ উত্তোলন না করেই ফিরে যান তারা।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.